গুলিস্তানে সংঘর্ষ, আটক ২০০
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
রাজধানীর গুলিস্তানে ফুটপাতের হকার ও বিপনী বিতানের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় বৃষ্টির মতো ঢিল পড়তে থাকে, লাঠি হাতে মারামারি হয় ও পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। আজ শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনারও রয়েছেন। টিয়ার শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ২০০ জনকে আটক করার কথা জানিয়েছেন পল্টন থানার ওসি মোরশেদ আলম।
গুলিস্তানের ঢাকা ট্রেড সেন্টারের সামনের ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ করে ওই সড়ক যান চলাচলের উপযোগী করার পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বৃহস্পতিবার ওই এলাকা পরিদর্শনে যান।
তিনি ফিরে যাওয়ার পরপরই হকার এবং ঐ বিপণি বিতানের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে; যান চলাচল বন্ধ থাকে আড়াই ঘণ্টা।
ওই ঘটনার পর থমথমে পরিস্থিতির মধ্যে শুক্রবার সকাল থেকে গুলিস্তান ফ্লাইওভারের নিচে অবস্থান নিতে থাকেন হাকাররা। এদিকে স্থানীয় বিপণি বিতানের ব্যবসায়ীরাও তাদের দোকানে যেতে শুরু করেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে গেলে শুরু হয় সংঘর্ষ। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে ওই এলাকা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই সংঘর্ষের মধ্যে উড়ে আসা ইটের আঘাতে আহত হন মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার আনোয়ার হোসেন। বেলা ২টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ চলার পর পুলিশ টিয়ারশেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই পক্ষকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়।
পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে দুপুরে ঘটনাস্থলে যান ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে, নিয়ন্ত্রণে থাকবে। যারা এই অপরাধের সাথে জড়িত হয়েছে, যারা আত্মঘাতি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে, যারা এই জন নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটাচ্ছে, তাদের এক বিন্দুও ছাড় দেওয়া হবে না।”
এই প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, “আপনারা জানেন, এই রাস্তাগুলোতে হকাররা বসেছিল। আমরা ও সিটি করপোরেশন মিলে এটা উচ্ছেদ করেছি জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে। এখন তারা (হকার) যদি গোলমাল করে। তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেব। মামলা হবে, গ্রেপ্তার হবে। যে আইন ভাঙবে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।” পুলিশ কমিশনার বলেন, মতিঝিল বিভাগে উপ-কমিশনার আনোয়ার হোসেন গুরুতর আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে মো. বিল্লাল, মো. বাবুল, মিজানুর রহমান, তারেক নামে চার হকার এবং নজরুল ইসলাম নামে এক দোকানের কর্মচারী ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের এডিসি মো. তারেক বিন রশিদ জানান, আটকদের যাচাই বাছই করে যারা দোষী, তাদের বৃহস্পতিবার হওয়া দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। এছাড়া শুক্রবারের ঘটনায় আরেকটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
সংঘর্ষ থামলেও ঢাকা ট্রেড সেন্টারের সামনের অংশে যান চালাচল বন্ধ রয়েছে। দোকানপাটও খোলেনি। বিকাল সাড়ে ৩টার সময়ও বিপুল সংখ্যক পুলিশকে সেখানে অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা গেছে।
ঢাকা ট্রেড সেন্টার (দক্ষিণ) দোকান মালিক সমিতির সহসভাপতি আসলাম হোসেন বলেন, হকাররা দীর্ঘদিন ধরে জোর করে মার্কেটের বারান্দা ও সামনের ফুটপাত দখল করে রেখেছিল। তিনি বলেন, “মার্কেট কমিটির লোকজন বৃহস্পতিবার ফুটপাতের দোকানদারদের চলে যেতে বললে তারা না গিয়ে উল্টো কমিটির লোকদের মারধর শুরু করে। এরপরই সংঘর্ষ বাঁধে।”
এর জের ধরেই দুই পক্ষ শুক্রবার আবারও সংঘর্ষে জড়ায় বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া